রূপকথার গ্রাম চক-চান্দিরা। অষ্টম শতাব্দীর পাল বংশের কোনো এক রাজার রাজ্য ছিল এই খানে। রাজপ্রসাদ, সৈন্য, রাজকার্য আর রানী নিয়ে খুব সুখেই দিন কাটছিল তার। কিন্তু হঠাৎ কী এক অসুখে পড়লেন রানী। কিছুতেই সে অসুখ আর ভালো হয় না। দিন দিন শুধু রানীর স্বাস্থ্যের অবনতিই হচ্ছিল। রাজার মনে শান্তি নেই। রাজপ্রসাদ থেকেও উধাও হলো সুখও। সারারাজ্যে এলান করা হলো রানীর অসুখ সারানোর জন্য। রাজ্যের যত হেকিম, বৈদ্য সবাই এলেন রাজ সভায়। তারপর এক হেকিম জানালেন, রানীর অসুখ ভারী কঠিন। সারতে হলে রাজাকে ৩৬৫টা পুকুর খনন করতে হবে। আর বছরের এক এক দিন রানী এক এক পুকুরে গোসল করবেন। বছরের ৩৬৫ দিন ওই ৩৬৫ পুকুরে গোসল করলে, তবেই সুস্থ হবেন রানী। এরপর রাজা তার প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য রাজ্যে এই ৩৬৫ পুকুর খনন করেন। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে সেই রাজা, রাজ্য আর রাজপ্রসাদ। কিন্তু মানুষের মুখে মুখে আজও রয়ে গেছে সেই লোকগাঁথা।

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের এই গ্রামে পৌঁছেই চোখে পরবে বিশাল এক বিল। নাম তার ঘুকশির বিল। বিলের পাশে সারি সারি পুকুর। সামনে খানিকটা এগুতেই আরও কিছু পুকুর। বলতে গেলে সারা গ্রাম জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এই ৩৬৫ পুকুর। স্থানীয়রা এই জায়গাটিকে বলে তিনশতিনা। একসাথে পাশাপাশি ৩৬৫ পুকুর কালের সাক্ষী হয়ে এখনো রয়েছে এখানে। এখানে রাজার রাজপ্রসাদ বা অন্য কোনো কিছুর ধ্বংসাবশেষ কিছুই চোখে পড়েনি। সেজন্য সেখান থেকে জানাও যায়নি সেগুলোর সঠিক ইতিহাস। হয়তো শুধু পুকুরগুলোই সেই কথিত ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে।