এড শিরান : ভয়, জড়তা, হীনমন্যতাকে জয় করে লাখো মানুষের প্লেলিস্টে। অল্পকিছু মানুষের সামনে যে কথা বলতে ভয় পেত, এখন সে ওয়েম্বলি, সান সিরু স্টেডিয়ামে লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে গান গায়। মানুষটা এড শিরান।
এখন গোটা দুনিয়া যাকে জনপ্রিয় গানের গায়ক হিসেবে জানে, যার গান প্লেলিস্টে বাজে লক্ষ লক্ষ মানুষের। অথচ, জীবন কখনোই এই পর্যায়ে এসে ঠেকবে তা এড শিরানের শৈশব থেকে কেউ ভাবার সাহস করেইনি।
যে ছেলে ঠিকমতো কথা বলতে পারে না, তোতলামো করে কখনো কখনো, কখনো জড়তায় কুঁকড়ে যায় সে ছেলে এখন গানের মঞ্চে হাজার হাজার মানুষের সামনে পারফর্মেন্স করে। এই বদলটা কি করে হলো?
এডওয়ার্ড ক্রিস্টোফার শিরানের জন্ম নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে। ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার অঞ্চলে। তার বাবা আর্ট কনসালটেন্সি চালাতেন সেই সময়। নাম ছিল ‘শিরান লক’। এতে হয়ত খানিকটা বোঝা যায় এড শিরানের পরিবার শিল্পমনাই ছিল।
কিন্তু, এড কোনো এক অজানা কারণে শৈশবের দিনগুলোতে ভীষণরকম চাপা স্বভাবের ছিলেন। খুবই ইন্ট্রোভার্ট ধরণের মানুষ যে কি না কাউকে কিছু বলে বোঝাতে পারত না।
স্কুলে অন্য ছেলেপেলেদের সাথে মিশতে পারতেন না সহজ ভাবে। কোনো এক জড়তা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখত। তার ভাল লাগত গান। আশ্চর্যজনকভাবে গানের সময়টা তিনি বলতে গেলে স্বাভাবিক হয়ে যেতেন। তিনি গানটাকে ভীষণ ভালবাসতে শুরু করেন খুব অল্পবয়সেই। বয়স যখন চার তখন স্থানীয় গির্জায় গান গাওয়া শুরু করেন। এর ফাঁকে শিখতে শুরু করেন গিটার বাজানো।
তার আশেপাশের মানুষ বুঝতে পারলো শিরানের মধ্যে গান গাওয়ার একটা সহজাত প্রতিভা আছে। বুঝতে পেরেছিলেন গায়ক ডেমিয়েন রাইসও। একবার একটা শোয়ের ব্যাকস্টেজে ডেমিয়েন রাইসের সাথে কথা বলার সুযোগ পান শিরান। সেই কথোপকথনের পর এড শিরান আরো বেশি অনুপ্রাণিত হন, বুঝতে পারেন গান গাওয়াই তার ভবিতব্য। এগারো বছর বয়স থাকতেই তিনি নিজে গান লিখতে শুরু করেন। সহজ লিরিকের গান। চারপাশের দেখা ভুবনকে নিজের মতো করে লিখে ফেলেন, গিটারে সুর তোলেন।
গানের সাথে জড়িয়ে থাকার সময়টায় শুধু ভাল থাকতে পারতেন তিনি। এটা যেনো এগারো বছর বয়সী কিশোরের চেনা জগত। এই জগতের বাইরে এড শিরান অপ্রস্তুত হয়ে যান, মেলাতে পারেন না নিজেকে। ফলে তাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
ছোটবেলায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে একটি ভুল অপারেশনের ফলে এড শিরানের চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কথা বলার মধ্যেও সমস্যা ছিল তার। অনেক মানুষকে দেখলে গাবড়ে যেতেন, তোতলাতেন। চোখের সমস্যা আড়াল করতে পড়তেন বড় আকারের চশমা।
কিন্তু, তাতে সমস্যা আরো বেড়ে গেল। স্কুলের ছেলেরা তার বড় চশমা নিয়ে টিটকারি করত। সে যখন কথা বলার সময় জড়তায় আটকে গিয়ে একটু তোতলাতো তখন ক্লাসের সবাই এটা নিয়ে হাসাহাসি শুরু করত। ক্লাসে কথা বলতে গিয়ে হঠাৎ করে আটকে যেত এড শিরান, যেনো মুখ ফ্রিজ হয়ে জমে গেছে। শরীর শিথিল। কথা বের হচ্ছে না।
এসব দেখে বন্ধুরা যখন হাসত তখন তার জীবনকে আরো বিভীষিকাময় মনে হতো। ভীষণই অসহ্যকর অনুভূতি। এক পর্যায়ে সে আরো নিজেকে খোলসে আটকে ফেললো। ক্লাসে আর কথাই বলতো না। তার কেবলই ভয়, সে মুখ দিয়ে কথা বললেই এটা হাস্যকর শোনাবে। মানুষ তাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে।
এমনকি তার চুল নিয়েও সবাই ব্যাঙ্গ করত। এড শিরানের চুলের রঙ ছিল লাল। সবাই এটা নিয়েও মজা করত। মোটকথা ক্রমাগত বুলিং এর শিকার হয়ে এড শিরানের শৈশব অসম্ভব বাজে কেটেছে। যদিও গান গাইতে গেলে নিজেকে একটু ফিরে পেতেন তিনি। গিটার হাতে নিয়ে যখন গান করতেন তখন মনে একটু স্বস্তি পেতেন। তাই সমস্যাগুলো এড়াতে তিনি আরো বেশি গানের জগতে ডুবে থাকতেন। কারণ, একমাত্র এই সময়টায় তিনি নিজের স্বাধীন স্বত্তাকে অনুভব করতে পারতেন।
এড শিরান রাতারাতি স্বাভাবিক হয়ে যাননি। তিনি খুঁজে বেড়িয়েছেন সম্ভাব্য সকল পথ। স্পিচ থেরাপি নিতে গিয়েছিলেন যেনো বাক জড়তা কাটে। কাজ হলো না। আরো বিভিন্ন রকম ভাবে চেষ্টা করেও যখন আশানুরূপ উন্নতি দেখা গেল না তখনই একটা ঘটনা ঘটলো।
এড শিরানের বাবা বিখ্যাত র্যাপার এমিনেমের একটা এলবাম কিনে নিয়ে আসলো বাড়িতে। “মার্শাল ম্যাথার্স এলপি” নামক সেই এলবামের প্রত্যেকটা গান শুনে চমকে যান তিনি। এতো দ্রুত র্যাপ গান চলছে, একটা মানুষ কোনো জড়তা ছাড়াই বাক্যের পর বাক্য সুরে সুরে র্যাপ করছে ব্যাপারটা বেশ অভিনব মনে হয়েছে। এড শিরান অল্পদিনেই এলবামের সবগুলো গান মুখস্থ করে ফেললেন। গানগুলো গাইতে গাইতে তিনি খেয়াল করলেন তার জড়তা কাটতে শুরু করেছে। এটা সেই সময়ের কথা যখন তিনি নিজে নিজে গান লিখতে শুরু করেছেন তখন।
এড শিরান তারপর গানের শো করতে থাকেন। কোনো কোনো সপ্তাহে অনেকগুলো শো থাকে তার। গান নিয়ে তার ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। ১৬ বছর বয়সেই বের করে ফেলেন নিজের প্রথম এলবাম।
২০০৮ সালে এড শিরান আসেন লন্ডনে। এখান থেকে সংগীতের ক্যারিয়ার আরো সামনের দিকে এগিয়ে নেবেন সেরকমটাই চিন্তা ছিল তার। লন্ডনে আসেন বলতে গেলে শূণ্য হাতে। নিজের ব্যাকপ্যাক আর গিটারটা হাতে নিয়ে৷ এই জীবনটা অনিশ্চিত জেনেও এড শিরান এখানে থাকেন। কোনো কোনো দিন তার খাবার জুটত না, শেয়ার করেও থাকার জায়গা মিলত না বলে থাকতে হয়েছে রেলস্টেশনে৷
জীবন সংগ্রাম চলতে থাকে এড শিরানের। গান গাওয়ার ছোট ছোট সুযোগগুলোও তিনি কাজে লাগাতে থাকেন। ২০০৯ সালে তিনি তিনশোর উপরে শো করেন বিভিন্ন জায়গায়।
২০১০ সাল। স্যোসাল মিডিয়া তখনো এখনকার মতো এতোটা জমজমাট না। কিন্তু এড শিরান এই জায়গাটার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছুটা আশাবাদী ছিলেন। তাই তিনি তার গানের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দিতে থাকলেন। ফলে অনেকে তাকে চিনতে শুরু করলো। “এক্সাম্পল” নামে একজন র্যাপার এড শিরানের গানের স্টাইল পছন্দ করলেন। তিনি একটি মিউজিক্যাল ট্যুরে এড শিরানকে আমন্ত্রণ করলেন। এই ট্যুরের ভিডিও এড শিরানকে আরো এক্সপোজার এনে দেয় স্যোসাল মিডিয়ায়।
এড শিরান নিজেকে আরো এক্সপ্লোর করতে চলে আসেন আমেরিকায়। এখানে এসে তিনি বিভিন্ন রেডিও, টিভি, স্টুডিওতে গান পাঠাতে থাকেন। তেমন সাড়া আসে না যদিও। তারপর একদিন ফক্সহোল ক্লাবে একটি রেডিও চ্যানেলের প্রোগ্রামে তাকে ডাকা হয়। হঠাৎ করেই উপস্থাপক ও অস্কারজয়ী অভিনেতা জেমজ ফক্স এড শিরানকে মঞ্চে ডাকেন গান গাইবার জন্য। এই অপ্রত্যাশিত ডাকের জন্য তিনি যদিও প্রস্তুত ছিলেন না।৷ কিন্তু যখন তিনি নিজেকে শান্ত করে গান গাওয়া শুরু করলেন, দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে গেল। গানের শেষে সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানাচ্ছে তাকে।
উপস্থাপক জেমি ফক্স এড শিরানের গান পছন্দ করেন বলে তিনি এই তরুণকে সাহায্য করতে চান। তাই নিজের রেকর্ডিং স্টুডিও ব্যবহার করতে দেন এড শিরানকে। এখান থেকে রিলিজ হয় কিছু গান। একেকটা গান যেনো এড শিরানকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছিল। আইটিউন্স এর টপচার্টে উঠে যায় তার গান।
এই সাফল্যের পর প্রখ্যাত আটলান্টিক রেকর্ডস এড শিরানের প্রথম স্টুডিও এলবাম প্রকাশ করে প্লাস (+) নামে। এটি একবছরে দশলাখের উপর কপি বিক্রি হয়!
তার দ্বিতীয় এলবাম (X) ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়। এই এলবামটি ব্রিটেনের টপ চার্টের এক নাম্বারে উঠে আসে। এই এলবামের ‘থিংকিং আউট লাউড’ এর জন্য তিনি দুটি গ্র্যামি পুরষ্কার পান। আর সবচেয়ে বড় পুরষ্কার মানুষের অবাধ ভালবাসা, সেটাও তিনি পাচ্ছেন বাঁধভাঙা!
এখন এড শিরানকে সারা পৃথিবী চেনে। যারা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো তাদের প্লেলিস্টেও থাকে এড শিরানের গান। এখন সকলে তাকে প্রশংসায় ভাসায়, এখন এড শিরান আর মানুষকে ভয় পান না। মানুষের ভালবাসায় অভ্যস্ত তিনি। অল্পকিছু মানুষের সামনে যে কথা বলতে যে ভয় পেত, এখন সে হাজার হাজার মানুষের সামনে গান গায়।
তার লাল চুল, বড় চশমা এখন ট্রেডমার্ক হয়ে গেছে। যা কিছুর জন্য বুলিং এর শিকার হতে হতো তাকে, এখন সেগুলোই তাকে সবার চেয়ে আলাদা করেছে।
সম্পাদনাঃ Mizanur Rahman Niloy
এখন গোটা দুনিয়া যাকে জনপ্রিয় গানের গায়ক হিসেবে জানে, যার গান প্লেলিস্টে বাজে লক্ষ লক্ষ মানুষের। অথচ, জীবন কখনোই এই পর্যায়ে এসে ঠেকবে তা এড শিরানের শৈশব থেকে কেউ ভাবার সাহস করেইনি।
যে ছেলে ঠিকমতো কথা বলতে পারে না, তোতলামো করে কখনো কখনো, কখনো জড়তায় কুঁকড়ে যায় সে ছেলে এখন গানের মঞ্চে হাজার হাজার মানুষের সামনে পারফর্মেন্স করে। এই বদলটা কি করে হলো?
এডওয়ার্ড ক্রিস্টোফার শিরানের জন্ম নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে। ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার অঞ্চলে। তার বাবা আর্ট কনসালটেন্সি চালাতেন সেই সময়। নাম ছিল ‘শিরান লক’। এতে হয়ত খানিকটা বোঝা যায় এড শিরানের পরিবার শিল্পমনাই ছিল।
কিন্তু, এড কোনো এক অজানা কারণে শৈশবের দিনগুলোতে ভীষণরকম চাপা স্বভাবের ছিলেন। খুবই ইন্ট্রোভার্ট ধরণের মানুষ যে কি না কাউকে কিছু বলে বোঝাতে পারত না।
স্কুলে অন্য ছেলেপেলেদের সাথে মিশতে পারতেন না সহজ ভাবে। কোনো এক জড়তা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখত। তার ভাল লাগত গান। আশ্চর্যজনকভাবে গানের সময়টা তিনি বলতে গেলে স্বাভাবিক হয়ে যেতেন। তিনি গানটাকে ভীষণ ভালবাসতে শুরু করেন খুব অল্পবয়সেই। বয়স যখন চার তখন স্থানীয় গির্জায় গান গাওয়া শুরু করেন। এর ফাঁকে শিখতে শুরু করেন গিটার বাজানো।
তার আশেপাশের মানুষ বুঝতে পারলো শিরানের মধ্যে গান গাওয়ার একটা সহজাত প্রতিভা আছে। বুঝতে পেরেছিলেন গায়ক ডেমিয়েন রাইসও। একবার একটা শোয়ের ব্যাকস্টেজে ডেমিয়েন রাইসের সাথে কথা বলার সুযোগ পান শিরান। সেই কথোপকথনের পর এড শিরান আরো বেশি অনুপ্রাণিত হন, বুঝতে পারেন গান গাওয়াই তার ভবিতব্য। এগারো বছর বয়স থাকতেই তিনি নিজে গান লিখতে শুরু করেন। সহজ লিরিকের গান। চারপাশের দেখা ভুবনকে নিজের মতো করে লিখে ফেলেন, গিটারে সুর তোলেন।
গানের সাথে জড়িয়ে থাকার সময়টায় শুধু ভাল থাকতে পারতেন তিনি। এটা যেনো এগারো বছর বয়সী কিশোরের চেনা জগত। এই জগতের বাইরে এড শিরান অপ্রস্তুত হয়ে যান, মেলাতে পারেন না নিজেকে। ফলে তাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
ছোটবেলায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে একটি ভুল অপারেশনের ফলে এড শিরানের চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কথা বলার মধ্যেও সমস্যা ছিল তার। অনেক মানুষকে দেখলে গাবড়ে যেতেন, তোতলাতেন। চোখের সমস্যা আড়াল করতে পড়তেন বড় আকারের চশমা।
কিন্তু, তাতে সমস্যা আরো বেড়ে গেল। স্কুলের ছেলেরা তার বড় চশমা নিয়ে টিটকারি করত। সে যখন কথা বলার সময় জড়তায় আটকে গিয়ে একটু তোতলাতো তখন ক্লাসের সবাই এটা নিয়ে হাসাহাসি শুরু করত। ক্লাসে কথা বলতে গিয়ে হঠাৎ করে আটকে যেত এড শিরান, যেনো মুখ ফ্রিজ হয়ে জমে গেছে। শরীর শিথিল। কথা বের হচ্ছে না।
এসব দেখে বন্ধুরা যখন হাসত তখন তার জীবনকে আরো বিভীষিকাময় মনে হতো। ভীষণই অসহ্যকর অনুভূতি। এক পর্যায়ে সে আরো নিজেকে খোলসে আটকে ফেললো। ক্লাসে আর কথাই বলতো না। তার কেবলই ভয়, সে মুখ দিয়ে কথা বললেই এটা হাস্যকর শোনাবে। মানুষ তাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে।
এমনকি তার চুল নিয়েও সবাই ব্যাঙ্গ করত। এড শিরানের চুলের রঙ ছিল লাল। সবাই এটা নিয়েও মজা করত। মোটকথা ক্রমাগত বুলিং এর শিকার হয়ে এড শিরানের শৈশব অসম্ভব বাজে কেটেছে। যদিও গান গাইতে গেলে নিজেকে একটু ফিরে পেতেন তিনি। গিটার হাতে নিয়ে যখন গান করতেন তখন মনে একটু স্বস্তি পেতেন। তাই সমস্যাগুলো এড়াতে তিনি আরো বেশি গানের জগতে ডুবে থাকতেন। কারণ, একমাত্র এই সময়টায় তিনি নিজের স্বাধীন স্বত্তাকে অনুভব করতে পারতেন।
এড শিরান রাতারাতি স্বাভাবিক হয়ে যাননি। তিনি খুঁজে বেড়িয়েছেন সম্ভাব্য সকল পথ। স্পিচ থেরাপি নিতে গিয়েছিলেন যেনো বাক জড়তা কাটে। কাজ হলো না। আরো বিভিন্ন রকম ভাবে চেষ্টা করেও যখন আশানুরূপ উন্নতি দেখা গেল না তখনই একটা ঘটনা ঘটলো।
এড শিরানের বাবা বিখ্যাত র্যাপার এমিনেমের একটা এলবাম কিনে নিয়ে আসলো বাড়িতে। “মার্শাল ম্যাথার্স এলপি” নামক সেই এলবামের প্রত্যেকটা গান শুনে চমকে যান তিনি। এতো দ্রুত র্যাপ গান চলছে, একটা মানুষ কোনো জড়তা ছাড়াই বাক্যের পর বাক্য সুরে সুরে র্যাপ করছে ব্যাপারটা বেশ অভিনব মনে হয়েছে। এড শিরান অল্পদিনেই এলবামের সবগুলো গান মুখস্থ করে ফেললেন। গানগুলো গাইতে গাইতে তিনি খেয়াল করলেন তার জড়তা কাটতে শুরু করেছে। এটা সেই সময়ের কথা যখন তিনি নিজে নিজে গান লিখতে শুরু করেছেন তখন।
এড শিরান তারপর গানের শো করতে থাকেন। কোনো কোনো সপ্তাহে অনেকগুলো শো থাকে তার। গান নিয়ে তার ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। ১৬ বছর বয়সেই বের করে ফেলেন নিজের প্রথম এলবাম।
২০০৮ সালে এড শিরান আসেন লন্ডনে। এখান থেকে সংগীতের ক্যারিয়ার আরো সামনের দিকে এগিয়ে নেবেন সেরকমটাই চিন্তা ছিল তার। লন্ডনে আসেন বলতে গেলে শূণ্য হাতে। নিজের ব্যাকপ্যাক আর গিটারটা হাতে নিয়ে৷ এই জীবনটা অনিশ্চিত জেনেও এড শিরান এখানে থাকেন। কোনো কোনো দিন তার খাবার জুটত না, শেয়ার করেও থাকার জায়গা মিলত না বলে থাকতে হয়েছে রেলস্টেশনে৷
জীবন সংগ্রাম চলতে থাকে এড শিরানের। গান গাওয়ার ছোট ছোট সুযোগগুলোও তিনি কাজে লাগাতে থাকেন। ২০০৯ সালে তিনি তিনশোর উপরে শো করেন বিভিন্ন জায়গায়।
২০১০ সাল। স্যোসাল মিডিয়া তখনো এখনকার মতো এতোটা জমজমাট না। কিন্তু এড শিরান এই জায়গাটার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছুটা আশাবাদী ছিলেন। তাই তিনি তার গানের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দিতে থাকলেন। ফলে অনেকে তাকে চিনতে শুরু করলো। “এক্সাম্পল” নামে একজন র্যাপার এড শিরানের গানের স্টাইল পছন্দ করলেন। তিনি একটি মিউজিক্যাল ট্যুরে এড শিরানকে আমন্ত্রণ করলেন। এই ট্যুরের ভিডিও এড শিরানকে আরো এক্সপোজার এনে দেয় স্যোসাল মিডিয়ায়।
এড শিরান নিজেকে আরো এক্সপ্লোর করতে চলে আসেন আমেরিকায়। এখানে এসে তিনি বিভিন্ন রেডিও, টিভি, স্টুডিওতে গান পাঠাতে থাকেন। তেমন সাড়া আসে না যদিও। তারপর একদিন ফক্সহোল ক্লাবে একটি রেডিও চ্যানেলের প্রোগ্রামে তাকে ডাকা হয়। হঠাৎ করেই উপস্থাপক ও অস্কারজয়ী অভিনেতা জেমজ ফক্স এড শিরানকে মঞ্চে ডাকেন গান গাইবার জন্য। এই অপ্রত্যাশিত ডাকের জন্য তিনি যদিও প্রস্তুত ছিলেন না।৷ কিন্তু যখন তিনি নিজেকে শান্ত করে গান গাওয়া শুরু করলেন, দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে গেল। গানের শেষে সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানাচ্ছে তাকে।
উপস্থাপক জেমি ফক্স এড শিরানের গান পছন্দ করেন বলে তিনি এই তরুণকে সাহায্য করতে চান। তাই নিজের রেকর্ডিং স্টুডিও ব্যবহার করতে দেন এড শিরানকে। এখান থেকে রিলিজ হয় কিছু গান। একেকটা গান যেনো এড শিরানকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছিল। আইটিউন্স এর টপচার্টে উঠে যায় তার গান।
এই সাফল্যের পর প্রখ্যাত আটলান্টিক রেকর্ডস এড শিরানের প্রথম স্টুডিও এলবাম প্রকাশ করে প্লাস (+) নামে। এটি একবছরে দশলাখের উপর কপি বিক্রি হয়!
তার দ্বিতীয় এলবাম (X) ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়। এই এলবামটি ব্রিটেনের টপ চার্টের এক নাম্বারে উঠে আসে। এই এলবামের ‘থিংকিং আউট লাউড’ এর জন্য তিনি দুটি গ্র্যামি পুরষ্কার পান। আর সবচেয়ে বড় পুরষ্কার মানুষের অবাধ ভালবাসা, সেটাও তিনি পাচ্ছেন বাঁধভাঙা!
এখন এড শিরানকে সারা পৃথিবী চেনে। যারা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো তাদের প্লেলিস্টেও থাকে এড শিরানের গান। এখন সকলে তাকে প্রশংসায় ভাসায়, এখন এড শিরান আর মানুষকে ভয় পান না। মানুষের ভালবাসায় অভ্যস্ত তিনি। অল্পকিছু মানুষের সামনে যে কথা বলতে যে ভয় পেত, এখন সে হাজার হাজার মানুষের সামনে গান গায়।
তার লাল চুল, বড় চশমা এখন ট্রেডমার্ক হয়ে গেছে। যা কিছুর জন্য বুলিং এর শিকার হতে হতো তাকে, এখন সেগুলোই তাকে সবার চেয়ে আলাদা করেছে।
সম্পাদনাঃ Mizanur Rahman Niloy
এড শিরান : ভয়, জড়তা, হীনমন্যতাকে জয় করে লাখো মানুষের প্লেলিস্টে। অল্পকিছু মানুষের সামনে যে কথা বলতে ভয় পেত, এখন সে ওয়েম্বলি, সান সিরু স্টেডিয়ামে লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে গান গায়। মানুষটা এড শিরান।
এখন গোটা দুনিয়া যাকে জনপ্রিয় গানের গায়ক হিসেবে জানে, যার গান প্লেলিস্টে বাজে লক্ষ লক্ষ মানুষের। অথচ, জীবন কখনোই এই পর্যায়ে এসে ঠেকবে তা এড শিরানের শৈশব থেকে কেউ ভাবার সাহস করেইনি।
যে ছেলে ঠিকমতো কথা বলতে পারে না, তোতলামো করে কখনো কখনো, কখনো জড়তায় কুঁকড়ে যায় সে ছেলে এখন গানের মঞ্চে হাজার হাজার মানুষের সামনে পারফর্মেন্স করে। এই বদলটা কি করে হলো?
এডওয়ার্ড ক্রিস্টোফার শিরানের জন্ম নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে। ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার অঞ্চলে। তার বাবা আর্ট কনসালটেন্সি চালাতেন সেই সময়। নাম ছিল ‘শিরান লক’। এতে হয়ত খানিকটা বোঝা যায় এড শিরানের পরিবার শিল্পমনাই ছিল।
কিন্তু, এড কোনো এক অজানা কারণে শৈশবের দিনগুলোতে ভীষণরকম চাপা স্বভাবের ছিলেন। খুবই ইন্ট্রোভার্ট ধরণের মানুষ যে কি না কাউকে কিছু বলে বোঝাতে পারত না।
স্কুলে অন্য ছেলেপেলেদের সাথে মিশতে পারতেন না সহজ ভাবে। কোনো এক জড়তা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখত। তার ভাল লাগত গান। আশ্চর্যজনকভাবে গানের সময়টা তিনি বলতে গেলে স্বাভাবিক হয়ে যেতেন। তিনি গানটাকে ভীষণ ভালবাসতে শুরু করেন খুব অল্পবয়সেই। বয়স যখন চার তখন স্থানীয় গির্জায় গান গাওয়া শুরু করেন। এর ফাঁকে শিখতে শুরু করেন গিটার বাজানো।
তার আশেপাশের মানুষ বুঝতে পারলো শিরানের মধ্যে গান গাওয়ার একটা সহজাত প্রতিভা আছে। বুঝতে পেরেছিলেন গায়ক ডেমিয়েন রাইসও। একবার একটা শোয়ের ব্যাকস্টেজে ডেমিয়েন রাইসের সাথে কথা বলার সুযোগ পান শিরান। সেই কথোপকথনের পর এড শিরান আরো বেশি অনুপ্রাণিত হন, বুঝতে পারেন গান গাওয়াই তার ভবিতব্য। এগারো বছর বয়স থাকতেই তিনি নিজে গান লিখতে শুরু করেন। সহজ লিরিকের গান। চারপাশের দেখা ভুবনকে নিজের মতো করে লিখে ফেলেন, গিটারে সুর তোলেন।
গানের সাথে জড়িয়ে থাকার সময়টায় শুধু ভাল থাকতে পারতেন তিনি। এটা যেনো এগারো বছর বয়সী কিশোরের চেনা জগত। এই জগতের বাইরে এড শিরান অপ্রস্তুত হয়ে যান, মেলাতে পারেন না নিজেকে। ফলে তাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
ছোটবেলায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে একটি ভুল অপারেশনের ফলে এড শিরানের চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কথা বলার মধ্যেও সমস্যা ছিল তার। অনেক মানুষকে দেখলে গাবড়ে যেতেন, তোতলাতেন। চোখের সমস্যা আড়াল করতে পড়তেন বড় আকারের চশমা।
কিন্তু, তাতে সমস্যা আরো বেড়ে গেল। স্কুলের ছেলেরা তার বড় চশমা নিয়ে টিটকারি করত। সে যখন কথা বলার সময় জড়তায় আটকে গিয়ে একটু তোতলাতো তখন ক্লাসের সবাই এটা নিয়ে হাসাহাসি শুরু করত। ক্লাসে কথা বলতে গিয়ে হঠাৎ করে আটকে যেত এড শিরান, যেনো মুখ ফ্রিজ হয়ে জমে গেছে। শরীর শিথিল। কথা বের হচ্ছে না।
এসব দেখে বন্ধুরা যখন হাসত তখন তার জীবনকে আরো বিভীষিকাময় মনে হতো। ভীষণই অসহ্যকর অনুভূতি। এক পর্যায়ে সে আরো নিজেকে খোলসে আটকে ফেললো। ক্লাসে আর কথাই বলতো না। তার কেবলই ভয়, সে মুখ দিয়ে কথা বললেই এটা হাস্যকর শোনাবে। মানুষ তাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে।
এমনকি তার চুল নিয়েও সবাই ব্যাঙ্গ করত। এড শিরানের চুলের রঙ ছিল লাল। সবাই এটা নিয়েও মজা করত। মোটকথা ক্রমাগত বুলিং এর শিকার হয়ে এড শিরানের শৈশব অসম্ভব বাজে কেটেছে। যদিও গান গাইতে গেলে নিজেকে একটু ফিরে পেতেন তিনি। গিটার হাতে নিয়ে যখন গান করতেন তখন মনে একটু স্বস্তি পেতেন। তাই সমস্যাগুলো এড়াতে তিনি আরো বেশি গানের জগতে ডুবে থাকতেন। কারণ, একমাত্র এই সময়টায় তিনি নিজের স্বাধীন স্বত্তাকে অনুভব করতে পারতেন।
এড শিরান রাতারাতি স্বাভাবিক হয়ে যাননি। তিনি খুঁজে বেড়িয়েছেন সম্ভাব্য সকল পথ। স্পিচ থেরাপি নিতে গিয়েছিলেন যেনো বাক জড়তা কাটে। কাজ হলো না। আরো বিভিন্ন রকম ভাবে চেষ্টা করেও যখন আশানুরূপ উন্নতি দেখা গেল না তখনই একটা ঘটনা ঘটলো।
এড শিরানের বাবা বিখ্যাত র্যাপার এমিনেমের একটা এলবাম কিনে নিয়ে আসলো বাড়িতে। “মার্শাল ম্যাথার্স এলপি” নামক সেই এলবামের প্রত্যেকটা গান শুনে চমকে যান তিনি। এতো দ্রুত র্যাপ গান চলছে, একটা মানুষ কোনো জড়তা ছাড়াই বাক্যের পর বাক্য সুরে সুরে র্যাপ করছে ব্যাপারটা বেশ অভিনব মনে হয়েছে। এড শিরান অল্পদিনেই এলবামের সবগুলো গান মুখস্থ করে ফেললেন। গানগুলো গাইতে গাইতে তিনি খেয়াল করলেন তার জড়তা কাটতে শুরু করেছে। এটা সেই সময়ের কথা যখন তিনি নিজে নিজে গান লিখতে শুরু করেছেন তখন।
এড শিরান তারপর গানের শো করতে থাকেন। কোনো কোনো সপ্তাহে অনেকগুলো শো থাকে তার। গান নিয়ে তার ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। ১৬ বছর বয়সেই বের করে ফেলেন নিজের প্রথম এলবাম।
২০০৮ সালে এড শিরান আসেন লন্ডনে। এখান থেকে সংগীতের ক্যারিয়ার আরো সামনের দিকে এগিয়ে নেবেন সেরকমটাই চিন্তা ছিল তার। লন্ডনে আসেন বলতে গেলে শূণ্য হাতে। নিজের ব্যাকপ্যাক আর গিটারটা হাতে নিয়ে৷ এই জীবনটা অনিশ্চিত জেনেও এড শিরান এখানে থাকেন। কোনো কোনো দিন তার খাবার জুটত না, শেয়ার করেও থাকার জায়গা মিলত না বলে থাকতে হয়েছে রেলস্টেশনে৷
জীবন সংগ্রাম চলতে থাকে এড শিরানের। গান গাওয়ার ছোট ছোট সুযোগগুলোও তিনি কাজে লাগাতে থাকেন। ২০০৯ সালে তিনি তিনশোর উপরে শো করেন বিভিন্ন জায়গায়।
২০১০ সাল। স্যোসাল মিডিয়া তখনো এখনকার মতো এতোটা জমজমাট না। কিন্তু এড শিরান এই জায়গাটার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছুটা আশাবাদী ছিলেন। তাই তিনি তার গানের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দিতে থাকলেন। ফলে অনেকে তাকে চিনতে শুরু করলো। “এক্সাম্পল” নামে একজন র্যাপার এড শিরানের গানের স্টাইল পছন্দ করলেন। তিনি একটি মিউজিক্যাল ট্যুরে এড শিরানকে আমন্ত্রণ করলেন। এই ট্যুরের ভিডিও এড শিরানকে আরো এক্সপোজার এনে দেয় স্যোসাল মিডিয়ায়।
এড শিরান নিজেকে আরো এক্সপ্লোর করতে চলে আসেন আমেরিকায়। এখানে এসে তিনি বিভিন্ন রেডিও, টিভি, স্টুডিওতে গান পাঠাতে থাকেন। তেমন সাড়া আসে না যদিও। তারপর একদিন ফক্সহোল ক্লাবে একটি রেডিও চ্যানেলের প্রোগ্রামে তাকে ডাকা হয়। হঠাৎ করেই উপস্থাপক ও অস্কারজয়ী অভিনেতা জেমজ ফক্স এড শিরানকে মঞ্চে ডাকেন গান গাইবার জন্য। এই অপ্রত্যাশিত ডাকের জন্য তিনি যদিও প্রস্তুত ছিলেন না।৷ কিন্তু যখন তিনি নিজেকে শান্ত করে গান গাওয়া শুরু করলেন, দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে গেল। গানের শেষে সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানাচ্ছে তাকে।
উপস্থাপক জেমি ফক্স এড শিরানের গান পছন্দ করেন বলে তিনি এই তরুণকে সাহায্য করতে চান। তাই নিজের রেকর্ডিং স্টুডিও ব্যবহার করতে দেন এড শিরানকে। এখান থেকে রিলিজ হয় কিছু গান। একেকটা গান যেনো এড শিরানকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছিল। আইটিউন্স এর টপচার্টে উঠে যায় তার গান।
এই সাফল্যের পর প্রখ্যাত আটলান্টিক রেকর্ডস এড শিরানের প্রথম স্টুডিও এলবাম প্রকাশ করে প্লাস (+) নামে। এটি একবছরে দশলাখের উপর কপি বিক্রি হয়!
তার দ্বিতীয় এলবাম (X) ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়। এই এলবামটি ব্রিটেনের টপ চার্টের এক নাম্বারে উঠে আসে। এই এলবামের ‘থিংকিং আউট লাউড’ এর জন্য তিনি দুটি গ্র্যামি পুরষ্কার পান। আর সবচেয়ে বড় পুরষ্কার মানুষের অবাধ ভালবাসা, সেটাও তিনি পাচ্ছেন বাঁধভাঙা!
এখন এড শিরানকে সারা পৃথিবী চেনে। যারা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো তাদের প্লেলিস্টেও থাকে এড শিরানের গান। এখন সকলে তাকে প্রশংসায় ভাসায়, এখন এড শিরান আর মানুষকে ভয় পান না। মানুষের ভালবাসায় অভ্যস্ত তিনি। অল্পকিছু মানুষের সামনে যে কথা বলতে যে ভয় পেত, এখন সে হাজার হাজার মানুষের সামনে গান গায়।
তার লাল চুল, বড় চশমা এখন ট্রেডমার্ক হয়ে গেছে। যা কিছুর জন্য বুলিং এর শিকার হতে হতো তাকে, এখন সেগুলোই তাকে সবার চেয়ে আলাদা করেছে।
সম্পাদনাঃ Mizanur Rahman Niloy